📌Table of content
ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা
ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন একটি অবিরাম প্রক্রিয়া বর্তমান প্রযুক্তির পরিবর্তন হচ্ছে অত্যন্ত দ্রুত । ফলে উৎপাদন , বাজারজাত করণ , প্রতিযোগিতা প্রভৃতি ক্ষেত্রে কৃতকার্যতা অর্জনের জন্য দক্ষ ব্যবস্থাপক অতি প্রয়োজন । এর সাথে আবার যুক্ত হচ্ছে বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া । ফলে সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন থেকে এখন প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা অর্জন ও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার দিকে ব্যবসায় সংগঠনগুলো বেশি যত্নবান হচ্ছে । এমতাবস্থায় ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের গুরুত্ব বাড়িয়ে বলার অপেক্ষা রাখে ।
১. সাংগঠনিক কার্যকারিতা :
ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন সাংগঠনিক দক্ষতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধির সহায়ক । প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন কর্মীদের মনোভাব ও আচরণের পরিবর্তন সাধন করে । এটা ব্যবস্থাপকদের যে কোন সময় মোকাবেলা করার সাহস যোগায় ।
২. দক্ষতা বৃদ্ধি :
বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকার জন্য দক্ষ ব্যবস্থাপকের বিকল্প নেই । দক্ষ , ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠান ও দেশের জন্য অর্থনৈতিক সম্পদ হিসাবে বিবেচনা করা হয় ।
৩. ব্যবস্থাপকীয় নিষ্ক্রয়তা :
বর্তমান একজন ব্যবস্থাপকে বাজার অর্থনীতি মনোবিজ্ঞান , নৃ - তত্ত্ব বিজ্ঞান , আইন প্রভৃতি বিষয়সহ ব্যবস্থাপনার আধুনিক জ্ঞান দক্ষতা থাকতে হয় । এ সকল জ্ঞান তাদের সমস্যা সমাধানে সহায়তা দান করে । ফলে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা সমস্যা কম হয় ।
৪. প্রযুক্তিগত নিষ্ক্রিয়তা :
শিল্পের ক্ষেত্রে প্রযুক্তি বর্তমানে তৃতীয় ও অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ দিক । প্রযুক্তি উন্নয়ন ও পরিবর্তন হচ্ছে অত্যন্ত দ্রুত । প্রযুক্তি উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি , পণ্যের ডিজাইন বাজারজাতকরণ কৌশল প্রভৃতি পরিবর্তন সাধন করছে ।
৫. সম্পদ সংরক্ষণ :
ব্যবস্থাপকদের অন্যতম কাজ হলো সম্পদের সর্বত্র ব্যবহার । তাকে সম্পদের অধিক ব্যবহার ও সংরক্ষণের নিত্য নতুন কৌশল রপ্ত করতে হয় ।
৬. সিদ্ধান্ত গ্রহণ :
বর্তমান সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্ব অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে । অনিশ্চিত পরিবেশে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অনেক ঝুঁকি । ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে ব্যবস্থাপকদের কৌশলের মাধ্যমে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত ।
৭. মানব সম্পদ সংরক্ষণ :
বিশ্বায়নের মূলে প্রতিষ্ঠানের কৃতকার্যতা নির্ভর করে নিত্য নতুন উদ্ভাবন ও উন্নয়নের উপর । অর্থাৎ ভবিষ্যৎ ব্যবস্থাপনা কাডারের প্রয়োজনীয়তা মেটানোর জন্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন মানব সম্পদ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে ।
৮. ব্যবস্থাপনার উদ্ভব ও উন্নয়ন :
বিশ্বায়নের মুখে প্রতিষ্ঠানের সাফল্য নির্ভর করে নতুন নতুন উদ্ভাবন ও উন্নয়নের উপর ব্যবস্থাপকের প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন এ কাজে সাহায্য করে ।
৯. প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা :
বিশ্বায়নের ফলে প্রতিযোগিতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে । এই অবস্থায় টিকে থাকার প্রতিযোগিতামূলকভাবে টিকে থাকতে হলে পণ্যের গুণগত মান উন্নত সেবা প্রদান করতে হবে ।
বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন গুরুত্বের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সফলতা অর্জন করানো যায় , তাই ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশিক্ষণের গুরুত্ব / প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা ।
প্রশিক্ষণ কর্মী এবং প্রতিষ্ঠান উভয়কে কতগুলো গুরুত্ব প্রদান করে । প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মী মূল্যবান কর্মীতে পরিণত হয় । আর প্রতিষ্ঠান তা বঞ্চিত লক্ষ্যার্জন করতে সক্ষম হয় । প্রয়োজনীয়তা গুলো হলো।
১. উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি :
প্রশিক্ষণ কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে । উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি প্রতিষ্ঠান ও কর্মী উভয়ে লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক । উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রতিষ্ঠানের মুনাফা বৃদ্ধি পায় এবং কর্মীর সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি পায় ।
২. সময় ও সম্পদের আচার হ্রাস :
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীরা সম্পদ এবং সময়ের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করে । এতে সময় এবং সম্পদের অবচয় কমে যায় । আবার প্রশিক্ষণের ফলে একজন ব্যক্তি ও তার কার্যক্ষমতার পূর্ণ ব্যবহারে সচেষ্ট হয় । ফলে মানব সম্পদের অবচয় কম হয় ।
৩. উন্নত পণ্য ও সেবা উৎপাদন :
প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উন্নত পণ্য ও সেবা উৎপাদন নিশ্চিত করা হয় । কারণ প্রশিক্ষিত কর্মীরা কাজের দক্ষতা অর্জন করে উৎপাদনশীল হয় । ফলে উন্নত মানের পণ্য উৎপাদন সম্ভব ।
৪. মনোবল বৃদ্ধি :
কাজ সম্পর্কে জ্ঞান এবং দক্ষতা কর্মীর আত্মপ্রত্যায় আত্মবিশ্বাস আত্মসম্মান বৃদ্ধি করে । তাই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা হলে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মানব সম্পদের মনোবল অনেক বৃদ্ধি পায় । কর্মীদের সাথে সাথে প্রতিষ্ঠানের মনোবল বৃদ্ধি পায় ।
৫. মানব মূলধন গঠন :
কাজের প্রশিক্ষণ পেলে এক একটি কর্মী সম্পদে পরিণত হয় । জটিল সময়ে সম্পদের ঘাটতি থাকলেও শুধু মানবীয় সম্পদ দিয়ে তার মোকাবেলা করা যায় । প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যে অর্থ বিনিয়োজিত করা হয় , তা বহুল অংশ দক্ষ জনশক্তিতে অভিজ্ঞতার রূপ লাভ করে ।
৬. দুর্ঘটনা হ্রাস :
প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানব সম্পর্কে কাজের ঝুঁকি ও খুটিনাটি বিষয় সম্বন্ধে অবহিত করা হয় । ফলে তারা সম্ভব্য ঝুঁকি এড়িয়ে কার্য সম্পাদনে সক্ষম হয় । এতে যান্ত্রিক দুর্ঘটনা হ্রাস পায় ।
৭. দ্রুত সম্প্রসারণ :
প্রশিক্ষণের ফলে একদল মানব সম্পদ গড়ে ওঠে ফলে প্রতিষ্ঠান দ্রুত সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে । এ ছাড়া নতুন করে উদ্যোগ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্ভব নয় ।
৮. প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি উন্নয়ন :
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীর দক্ষ মানব সম্পদে পরিণত হয় । আর দক্ষ মানব সম্পদের কারণে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি উন্নত হয় । প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি উন্নত হলে প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো মূল্যায়ন করে ।
৯. আধুনিক প্রযুক্তি ও কলাকৌশল ব্যবহার :
আধুনিক প্রযুক্তি ও কলাকৌশল বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে কর্মীরা তার সাথে পরিচিত হয়ে ওঠে । এর ফলে প্রতিষ্ঠানে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত হয় । এর ফলে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বৃদ্ধি পায় ।
১০. ইতিবাচক আচরণ :
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীর আচারণ হয় । ইতিবাচক ইতিবাচক আচরণের ফলে তারা একে অপরকে বুঝতে পারে এবং একে অপরের প্রতি সংবেদনশীল হয় । আর এ আচরণ প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুকূল।
Comments
Post a Comment