জনসংযোগ মিডিয়ার আলোচ্য বিষয় সমূহ
জনসংযোগ কিজনসংযোগ মিডিয়া কি
প্রিন্টমিডিয়া কি
পত্রপত্রিকা কি
পোস্টার কি
লিফলেট কি
বিলবোর্ড কি
ইলেকট্রিক মিডিয়া কি
রেডিও কি
টেলিভিশন কি
মাইক কি
রেডিও প্লেয়ার কি
জনসংযোগ
জনসংযোগ কি বা জনসংযোগ মিডিয়া কিঃ
জনসংযোগ হচ্ছে একই সঙ্গে অনেক গ্রাহক বা প্রাপকের বঙ্গানুবাদ কাছে বার্তা পৌঁছানোর এক উপায় । আর যে মিডিয়ার সাহায্যে এই বার্তা বা তথ্য স্থানান্তর করা হয় তাকে বলা হয় জনসংযোগ । আজকাল জনসংযোগের জন্যে অনেক মিডিয়া ব্যবহার করা হয় । নিচে কিছু জনসংযোগ মিডিয়ার বিবরণ তুলে ধরা হলো ।
প্রিন্টমিডিয়া :
প্রিন্ট মিডিয়া হচ্ছে জনসংযোগের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং পুরণো মিডিয়া । মুদ্রিত তথ্য মুদ্রিত উপায়ে বিশাল জনগোষ্ঠির কাছে প্রেরণ করবার জন্যে প্রস্তুত করা হয় । এর মধ্যে রয়েছে পত্রপত্রিকা , সাময়িকী , বই - পুস্তক , পোস্টার , লিফলেট , বিলবোর্ড ইত্যাদি ।
১. পত্রপত্রিকা : জনসংযোগের সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত মিডিয়া হচ্ছে সংবাদপত্র । বছরের পর বছর ধরে জনসংযোগের বার্তা প্রেরণ করবার উদ্দেশ্যে সংবাদপত্র ব্যবহৃত হয়ে আসছে । সরকার , বিভিন্ন কোম্পানি এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান জনগণের উদ্দেশ্যে সংবাদপত্রে নানা ধরণের তথ্য প্রকাশ করে থাকে । এটা শিক্ষিত জনগোষ্ঠির জন্যে এক সঠিক মাধ্যম , যেহেতু সংবাদপত্রের মাধ্যমে কাঙ্খিত জনগোষ্ঠির কাছে পুরো তথ্য পৌঁছানো যায় ।
২. সাময়িকী : সাময়িকী মুদ্রন করা হয় সাপ্তাহিক , পাক্ষিক , মাসিক এবং ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে । এই প্রিন্ট মিডিয়াতে যেসব তথ্য বিতরণ করা যায় সেগুলো হলো রাজনীতি , ব্যবসায় , খেলাধূলা , সাহিত্য , বিনোদন , কবিতা , সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ইত্যাদি ।
৩. বইপুস্তক : জনসংযোগের জন্যে বইপুস্তক হচ্ছে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রিন্ট মিডিয়া, যা প্রাচীন কাল থেকেই ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে । সারা বিশ্বের পাঠকদের কাছে বিক্রি করবার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বিভিন্ন বই প্রকাশিত হয়ে থাকে ।
৪. পোস্টার: পোস্টার হচ্ছে এক ধরণের মুদ্রিত জিনিস , যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট তথ্য জনসংযোগের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন স্থানে টাঙিয়ে রাখা হয় । রাজনৈতিক দল , ট্রেড ইউনিয়ন , অলাভজনক প্রতিষ্ঠান তাদের মতাদর্শ জনগণের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলবার জন্যে অনেক পোস্টার ব্যবহার করে থাকে । আজকাল কোন কোন কোম্পানিও তাদের পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপনের জন্যেও পোস্টার ব্যবহার করে থাকে ।
৫. লিফলেট : বড় বড় সমাবেশের লোকজনের মাঝে বিতরণ করবার জন্যে মুদ্রিত স্তহিসেবে লিফলেট ব্যবহৃত হয়ে থাকে । এর মাধ্যমে যেসকল তথ্য প্রচার করা হয় তাতে রয়েছে পণ্য , সেবা সংস্থা ইত্যাদি । এগুলো জনসংযোগের সস্তা পদ্ধতি ।
৬. বিলবোর্ড : বিলবোর্ড সেইসব বোর্ডকে বলা হয় , যেগুলো নির্দিষ্ট বার্তাসহ জনসংযোগের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট কিছু স্থানে ঝুলিয়ে রাখা হয়ে থাকে । আজকাল ইলেক্ট্রনিক পদ্দতির সাহায্যে পণ্যের প্রচারের জন্যে বিলবোর্ড জনপ্রিয় হয়ে উঠছে । আমরা আজকাল বিভিন্ন স্থানে চোখধাঁধানো বিলবোর্ড দেখতে পাই , যেগুলো লোকজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করবার জন্যে পুরোপুরি সক্ষম ।
ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া :
ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া হচ্ছে জনসংযোগের সবচেয়ে কার্যকর মিডিয়া । ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাহায্যে খুব দ্রুত বিশাল জনগোষ্ঠির কাছে খবরাখবর ও মতামত পৌঁছিয়ে দেওয়া যায় । বিভিন্ন রণের ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো :
১. রেডিও : রেডিও হচ্ছে জনসংযোগের জনপ্রিয় মাধ্যম । অনেক দূরে অবস্থানকারি ব্যক্তিবর্গের কাছে এর সাহায্যে তথ্য প্রেরণ করা যায় । সরকার এবং বিভিন্ন কোম্পানি সপ্তায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বা বার্তা জনগণের কাছে তুলে ধরবার জন্যে রেডিও ব্যবহার করে থাকে । বিশাল গনগোষ্ঠি এর নাগালের মধ্যে থাকে ।
২. টেলিভিশন : রেডিও হচ্ছে জনসংযোগের সবচেয়ে শক্তিশালী ও প্রভাবশালী মাধ্যম । এর সাহায্যে একই সঙ্গে দর্শকদের কাছে ছবি ও কথা পাঠানো যায় । বিজ্ঞাপন , খবরাখবর , সংক্ষিপ্ত সংবাদ , বিভিন্ন অনুষ্ঠান এবং নীতিমালা ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান প্রর সাহায্যে প্রচার করা যায় । আজকাল কৃত্রিম উপগ্রহের আগমনের কারণে টেলিভিশন এর গ্রহনযোগ্যতা অনেক বেড়ে গেছে ।
৩. মাইক : জনসংযোগরে আরেক মাধ্যম হচ্ছে মাইক । এর সাহায্যে কোন বড় সমাবেশে মানুষের কণ্ঠস্বর বড় করে শোনানো হয় । মিটিং , সেমিনার , সিম্পোজিয়াম , রেলি , এমনকি , শ্রেণিকক্ষেও দূরের শ্রোতাদের কাছে বার্তা বা তথ্য পৌছাবার জন্যে মাইক ব্যবহৃত হয়ে থাকে ।
৪. রেকর্ড প্লেয়ার : রেকর্ড প্লেয়ার ব্যবহৃত হয় পরবর্তীকালে কোন বার্তা বা তথ্য ব্যবহার করবার জন্যে রেকর্ড করবার জন্যে । তাছাড়া , রেকর্ড প্লেয়ার এর সাহায্যে বিনোদন অনুষ্ঠানমালা রেকর্ড করে পরে সেটা উপভোগ করা হয়ে থাকে ।
নিম্নগামী যোগাযোগ আলোচ্য বিষয়সমূহ
নিম্নগামী যোগাযোগ
নিম্নগামী যোগাযোগ কি
নিম্নগামীযোগাযোগের সুবিধা সমূহ
নিম্নগামীযোগাযোগের অসুবিধা সমূহ
নিম্নগামী যোগাযোগের সুবিধা ও অসুবিধা
নিম্নগামী যোগাযোগ
অনেক সংস্থা নিম্নগামী যোগাযোগকে অন্য যেকোনো ধরনের যোগাযোগের চেয়ে সুবিধাজনকভাবে ব্যবহার করে। কারণ, একটি প্রতিষ্ঠান নিম্নমুখী যোগাযোগ ব্যবহার করে কিছু সুবিধা পায়।
নিম্নগামী যোগাযোগের সুবিধা:
নিম্নগামী যোগাযোগের সুবিধা বা সুবিধাগুলো নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো-
1. কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করুন: চাকরির স্তরের সাথে নিযুক্ত অধস্তনদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা এবং নির্দেশনা দেয় যা তাদের উদ্দেশ্যমূলকভাবে কাজ করতে সহায়তা করে।
2. পদ্ধতিগত ফর্ম: এই যোগাযোগ ব্যবস্থার অধীনে, একটি সাংগঠনিক শ্রেণিবিন্যাসে তথ্য প্রবাহ উচ্চ থেকে নিম্নতর হয়। এই পদ্ধতিগত প্রবাহ যোগাযোগের অন্য কোন ফর্মের মাধ্যমে অর্জন করা যায় না।
3. সুসম্পর্ক তৈরি করা: এটি শ্রেণীবিন্যাসে একটি চেইন তৈরি করে যা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মানুষের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
4. শৃঙ্খলা বিকাশ করুন: নিম্নগামী যোগাযোগের মাধ্যমে কঠোরভাবে চেইন অফ কমান্ড বজায় রাখার কারণে শৃঙ্খলার অনুভূতি স্পষ্টভাবে বিকশিত হয়।
5. ভালভাবে জানান: নিম্নমুখী যোগাযোগের ফলে নিম্ন স্তরের কর্মীরা প্রতিষ্ঠানের উচ্চতর কর্তৃপক্ষের দ্বারা উদ্দেশ্য, নীতি, পদ্ধতি এবং অন্যান্য সম্পর্কে ভালভাবে অবহিত হন।
6. সম্পূর্ণ ফর্ম: এটি যোগাযোগের একটি সম্পূর্ণ ফর্ম। কারণ, এই যোগাযোগ প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠানের উচ্চ স্তর থেকে নিম্ন স্তরের প্রতিটি স্তর অংশগ্রহণ করতে পারে।
7. ব্যাখ্যা: কার্যকর যোগাযোগের জন্য তথ্যের ব্যাখ্যা এবং বিশ্লেষণ প্রয়োজন। নিম্নগামী যোগাযোগ বিস্তারিত ব্যাখ্যার সুবিধা দেয় যাতে অধস্তনরা সহজেই বার্তাটি বুঝতে পারে।
8. কর্তৃত্বের অর্পণ: যেহেতু উচ্চ স্তর থেকে নিম্ন স্তরে নিম্নগামী যোগাযোগ প্রবাহ, এটি সংস্থার মধ্যে কর্তৃত্ব অর্পণকে সহজতর করে।
9. লক্ষ্য অর্জন: সংগঠনের লক্ষ্য নিম্নগামী যোগাযোগের মাধ্যমে সহজেই অর্জন করা যায়। কারণ, ব্যবস্থাপনা অধীনস্থদের উপর ইচ্ছাকৃতভাবে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে।
10. ডাইনামিক সিস্টেম: এটি যোগাযোগের একটি আরও গতিশীল সিস্টেম যা অন্য যেকোনও কারণ, এই সিস্টেমে উর্ধ্বতনরা সহজেই অধীনস্থদের কাছে বার্তা পাঠাতে পারেন।
11. পাসিং এড়িয়ে চলুন: নিম্নমুখী যোগাযোগে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাইপাস করা পরিচালন কর্মীদের সরাসরি কোনো বার্তা পাঠাতে পারে না বরং বার্তাটি পাস করা উচিত সহজেই তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে।
অসুবিধাগুলি যদিও নিম্নগামী যোগাযোগের কিছু সুবিধা বা সুবিধা রয়েছে তবে কিছু কারণে কিছু অসুবিধাও রয়েছে যা নীচে দেওয়া হল:
1. ধীর সিস্টেম ধীর যোগাযোগ পদ্ধতি কারণ এটি একটি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্তরের মধ্য দিয়ে যেতে প্রয়োজন।
2. তথ্যের বিকৃতি: যখন তথ্য ভিন্ন মাত্রার মাধ্যমে গন্তব্যে পৌঁছায়, কখনও কখনও তা বিকৃত হয়ে যায়।
3. হতাশা স্বৈরাচারী প্রকৃতির এবং অধস্তনদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত হতে দেয় না। তাই অধীনস্থরা বিরক্ত ও হতাশ হয়ে পড়ে।
4. উৎসাহ হ্রাস করা: প্রেরণ প্রক্রিয়ার ধীরতা এবং তথ্য দেরিতে প্রাপ্তি অধীনস্থদের উৎসাহ হ্রাস করে।
5. অজ্ঞতা: কখনও কখনও এটা লক্ষ্য করা যায় যে শ্রেণীবিন্যাসের মধ্যম স্তরের নির্বাহীরা নিম্নগামী যোগাযোগকে পছন্দ করেন না।
6. সময় সাপেক্ষ • তথ্য সুশৃঙ্খলভাবে প্রবাহিত হওয়ার সাথে সাথে ধাপে ধাপে প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ হয়ে ওঠে।
7. নেতিবাচক প্রভাব: দীর্ঘ প্রক্রিয়া এবং প্রতিক্রিয়ার অভাব কর্মীদের মনোবলের উপর নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করে।
8. প্রতিক্রিয়ার অভাব: সাধারণত নিম্নমুখী যোগাযোগে অধীনস্থদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া পাওয়ার সুযোগ নেই। এটি অসন্তোষজনক কর্মক্ষমতা বাড়ে.
9. দক্ষতা হ্রাস: নিম্নগামী যোগাযোগে অনেক ভুল আছে। তাই এটি কর্মীদের দক্ষতা হ্রাস করে।
10. সন্দেহ: এই সিস্টেমে অধস্তনরা সর্বদা তাদের সুপারভাইজারদের নির্দেশাবলীর উপর সন্দেহ পোষণ করে।
11. সৌহার্দ্যের অভাব: অধীনস্থরা সহজে না নিলে তা অর্থহীন হতে পারে।
উপসংহার: উল্লিখিত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও, নিম্নগামী যোগাযোগ এখনও অনেক বেশি। নিম্নগামী যোগাযোগের প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে এটি দীর্ঘমেয়াদে নিরঙ্কুশ সফল হয়।
Comments
Post a Comment