মানব সম্পদ সংগ্রহ কী / মানব সম্পদ সংগ্রহ কাকে বলে / মানব সম্পদ সংগ্রহ বলতে কি বুঝায়
বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রয়োজন মিটানোর তাগিদে পর্যাপ্ত সংখ্যক প্রতিভাবান মানব সম্পদকে প্রতিষ্ঠানের প্রতি আকর্ষণ করাই এ প্রক্রিয়ার প্রধান সুতরাং প্রতিষ্ঠানে জনশক্তির প্রয়োজনীয়তা নিরূপণের পরবর্তী পর্যায়ে শূন্য ও সৃষ্ট নতুন পদগুলো পূরণের জন্য মানবসম্পদ সংগ্রহের কাজ শুরু হয় । সুতরাং "প্রতিষ্ঠানে সৃষ্ট বা শূন্য পদে বিভিন্ন উৎস থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক যোগ্য ও দক্ষ মানব সম্পদ খুঁজে বের করে তাদেরকে চাকরি লাভে আগ্রহী করে তোলার প্রক্রিয়াকে মানব সম্পদ সংগ্রহ বলে ।"
মানব সম্পদ সংগ্রহ সম্পর্কে কতিপয় বিশিষ্ট লেখকের মতামত
( Recruitment is the Searching for prospective employees and stimulating them to apply for job in the Organization ) “ মানব সম্পদ সংগ্রহ হলো সম্ভাবনাময় কর্মীদের অনুসন্ধানপূর্বক তাদেরকে প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য বেদন উদ্বুদ্ধ আবেদন করতে উদ্বুদ্ধ করার প্রক্রিয়া।
Stephen P. Robbens এর মতে :
( Recruitment is the descovering of potential applicants for actual or anticipated organizational vacancies or from another perspective it cam be looked at the linking activity bringing together these with jobs and these seeking jobs . ARCH
Milk ovich of Bordreau এর মতে :
( " Recruiting activities identify and attract a rool of candidatos for change in implement status , from which some will later be selected to receive offers ")
মানব সম্পদ সংগ্রহ একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া । যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে শূন্য পদের জন্য ভবিষ্যতে প্রয়োজন হতে পারে ভ্রমণ চিন্তার একদল দক্ষ কর্মীকে সংগ্রহে রাখা হয় । সাধারণত , কর্মী ব্যবস্থাপক যখন কর্মী সংগ্রহের উদ্যোগ গ্রহণ করেন তখনই কর্মী সংগ্রহের মূল কাজ শুরু হয়ে যায় ।
মানব সম্পদ সংগ্রহ প্রক্রিয়া কাকে বলে / মানব সম্পদ সংগ্রহ প্রক্রিয়া কি / মানব সম্পদ সংগ্রহ প্রক্রিয়া বলতে কি বুঝায়
প্রতিষ্ঠানে কোন কারণে পদ শূন্য হয়ে গেলে বা নতুন পদ সৃষ্টি করা হলে তা অবশ্যই পূরণ করতে হবে । এজন্য মানব সম্পদ বিভাগ বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রয়োজনীয়তার প্রতি লক্ষ্য রেখে মানব সম্পদ সংগ্রহের ব্যবস্থা করে থাকে । তবে মানব সম্পদ সংগ্রহ প্রক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট ধারাবাহিকতার মধ্যদিয়ে সম্পাদিত হয় । প্রথম থেকে আরম্ভ করে মানব সম্পদ নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত যাবতীয় কার্যক্রম যে প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হয় তাকে মানব সম্পদ সংগ্রহ প্রক্রিয়া বলে।
মানব সম্পদ সংগ্রহের প্রক্রিয়া সমূহ / মানব সম্পদ সংগ্রহ গৃহীত পদক্ষেপগুলো
১. মানব সম্পদ পরিকল্পনা :
মানব সম্পদ পরিকল্পনার দিয়ে মানব সম্পদ সংগ্রহ প্রক্রিয়ার কার্যক্রম শুরু হয় । মানব সম্পদ পরিকল্পনার দ্বারা জনশক্তি কাঠামোতে যে পরিবর্তন অভাস দেওয়া হয় , তারই বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু মানব সম্পদ সংগ্রহ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ।
২. কর্মীর সংখ্যা নির্ধারণ :
মানব সম্পদ পরিকল্পনা এবং বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি কাজ করতে প্রকৃত পক্ষে কত জন মানব সম্পদ দরকার হবে তা নির্ণয় করা হয় । অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক উৎস থেকে মানব সম্পদ সংগহ করা হোক না কেনো ঠিক কত সংখ্যক মানব সম্পদ নিযুক্ত করা হবে তা বিবেচনা রেখেই কাজ আরম্ভ করতে হয়।
৩. আবেদনকারীদের তালিকা প্রণয়ন :
এর পরে চাকরির জন্য যে সমস্ত আবেদনকারী আবেদন পত্র প্রদান করেছে তাদের একটি পুর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করা হয় । এ ক্ষেত্রে সমস্ত আবেদনকারীর একটি তথ্য ভিত্তি প্রণয়ন করা হয় । অর্থাৎ আবেদন পত্রের সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করা ।
৪. আবেদনকারী বাছাই ও সম্ভাব্য চাকরি প্রার্থীদের তালিকা প্রণয়ন :
এ পর্যায়ে আবেদন পত্র বাছাই করা হয় । যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ । কার্য নির্দিষ্টকরণ বা Job Seecifaction অনুযায়ী আবেদন পত্র বাছাই করা হয় এবং অপ্রয়োজনীয় আবেদন বাতিল করা হয় । আবেদন পত্র বাছাইয়ের পর যোগ্য পার্থীদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করা হয়। কার্য নির্দিষ্টকরণানুসারে কাজের জন্য উপযুক্তদের তালিকা করা হয় ।
৫. শূন্য পদ চিহ্নিতকরণ :
মানব সম্পদ সংগ্রহের প্রথম ধাপ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শূন্য পদের সংখ্যা জানা । বিভাগগুলো শূন্য পদ নির্ধারণের জন্য বর্তমানে শূন্য পদ ভবিষ্যৎ সৃষ্ট শূন্য পদ এবং পরিবর্তী পরিস্থিতি জনবল কাঠামো যেমন হতে পারে পূর্বানুমান করে প্রতিষ্ঠানের শূন্য পদের একটি সুস্পষ্ট ধারণা দিতে পারে ।
৬. কার্য বর্ণনা প্রস্তুতকরণ এবং কার্য সুনির্দিষ্টকরণ :
এই ধাপে কার্য বর্ণনার আওতার বাজার বিস্তারিত বিবরণ । অর্থাৎ একটি পদের দায়িত্ব , কর্তব্য জবাবদিহিতার সম্পর্ক এবং কাজের পরিবেশ সম্পর্কে করণীয় ধারণা দেওয়ার জন্য লিখিত বিবরণ তৈরি করা হয় । আবার কার্য নির্দিষ্টকরণের জন্য সম্ভাব্য কর্মীদের প্রয়োজনীয়তা যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার , কথা বলা হয় । তাই কর্মী সংগ্রহের এই ধাপে কার্য বিশ্লেষণের সব কিছু মাথায় রেখে কাজ করা হয় ।
৭. শূন্য পদের বিজ্ঞাপন :
এই ধাপে কর্মীদের আবেদন করতে আকৃষ্ট করার জন্য শূন্য পদের বিপরীতে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় । । বিজ্ঞাপনের মাধ্যম হিসাবে ছাপানো পত্রিকা অনলাইন পত্রিকা , চাকরির বিভিন্ন ওয়েব সাইট এমন কি টেলিভিশন পর্যন্ত ব্যবহার করা যেতে পারে ।
৮. সাক্ষাৎকারের আয়োজন :
কর্মী সংগ্রহের এই ধাপে কর্মীদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য দিনক্ষণ ঠিক করা হয় এবং সেই অনুযায়ী আবেদনকারীদের সাথে চিঠি বা টেলিফোন যোগাযোগ করা হয় , ——সাক্ষাৎকার প্রদানকারীদের সংখ্যা বেশি হলে সব প্রার্থীদের একদিনে না ডেকে ভিন্ন দিন আহ্বান করা হয় ।
৯. সাক্ষাৎকার পরিচালনা ও সিদ্ধান্তগ্রহণ :
কর্মী সংগ্রহ প্রক্রিয়ার এটি শেষ ধাপ । এই ধাপে কর্মীর সাথে কথা বলে জানার চেষ্টা করা হয় । ঘোষিত কার্য বর্ণনা ও কার্য নির্দিষ্টকরণ অনুযায়ী তাদের দায়িত্ব কর্তব্য পালন করার যোগ্যতা আছে কিনা এছাড়া কর্মীদের কাজের প্রতি ঝোঁক বুদ্ধিমত্তা , ব্যক্তিত্ব শারীরিক যোগ্যতা যাচাই করা হয় । সর্বশেষ তাকে রাখা হবে কিনা বিচার করা হয় ।
কর্মী সংগ্রহ হলেই এ প্রক্রিয়া কখনো শেষ হয় না বরং এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া । প্রতিষ্ঠানে নতুন কর্মীর প্রয়োজন বা শূন্য পদ সৃষ্টি হলেই আবার কর্মী সংগ্রহ শুরু করতে হয় ।
Comments
Post a Comment